সংবাদ শিরোনাম: |
মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাত্র দুই দিন পর, ১৮ ডিসেম্বর রায়েরবাজার বধ্যভূমি থেকে উদ্ধার করা হয় এক বিভৎস লাশ।
চোখ উপড়ে ফেলা, সারা শরীরে বেয়নেটের আঘাত, হাত বাঁধা, হৃদপিণ্ড-কলিজা ছিন্নভিন্ন—এভাবেই শহীদ হন বিশ্বখ্যাত কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক ডা. ফজলে রাব্বি। ঢাকা মেডিকেলের সেরা ছাত্র ফজলে রাব্বি ১৯৬২ সালে লন্ডনের রয়্যাল কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স থেকে এমআরসিপি অর্জন করেন, তাও একসঙ্গে দুই বিষয়ে—ইন্টারনাল মেডিসিন ও কার্ডিওলজিতে।
তিনি অল্প বয়সেই আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন গবেষণায়, আর ১৯৭০ সালে মনোনীত হন পাকিস্তানের সেরা অধ্যাপক পুরস্কারের জন্য। কিন্তু বাংলার মানুষের প্রতি ভালোবাসায় তিনি সেই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি ঢাকা মেডিকেলেই আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা দেন, নিজের গাড়ি ব্যবহার করেন মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায়। তাঁর স্ত্রী জাহানারা রাব্বিও মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে ছিলেন। মৃত্যুর কয়েকদিন আগে তিনি স্ত্রীকে বলেছিলেন—“ভুলে যেও না, ওরাও মানুষ; স্বাধীন বাংলাদেশে তাদেরও থাকতে দেবে।”
১৫ ডিসেম্বর বিকেলে পাকিস্তানি সেনা ও আলবদরেরা তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নেয়। তিন দিন পর পাওয়া যায় তাঁর নির্মমভাবে ক্ষতবিক্ষত দেহ। মাত্র ৩৯ বছর বয়সেই হারিয়েছিল বাংলাদেশ তার এক অনন্য মেধাবী সন্তানকে—যিনি হয়তো হতে পারতেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নোবেলজয়ী চিকিৎসা বিজ্ঞানী।
তবুও তিনি চিরজীবন বেঁচে থাকবেন আমাদের হৃদয়ে, ইতিহাসে, আর স্বাধীনতার স্বপ্নে। জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করি শহীদ অধ্যাপক ডা. ফজলে রাব্বিকে।